চাঁপাইনবাবগঞ্জ : বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে দুই সন্তানের জননীকে পরকিয়া প্রমের ফাঁদে ফেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ফকিরপাড়া শেষমাথা মহল্লার মো. মাজেদ আলীর ছেলে মো. ফয়সাল। প্রায় ১০ মাস প্রেম করে গর্ভবতী হলে জোরপূর্বক গর্ভপাত করায় ফয়সাল। বিভিন্ন কারনে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন জানতে পারলে সংসারে বিচ্ছেদ হয়। দুই ছেলেমেয়েকে বাসায় রেখে তাড়িয়ে দেয় ফকিরপাড়া শেষমাথা মহল্লার মো. নবাব আলীর (৫৬) মেয়ে মোসা. লিমাকে। অন্যদিকে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে বিয়ে করতে নারাজ কোরিয়া প্রবাসী ফয়সাল। অসহায় বাবা-মা থানায় অভিযোগ করলেও ফয়সালের অর্থ-বৃত্তের কাছে তার সবকিছুই তুচ্ছ। দুই সন্তান ও সংসার নিয়ে এখন উভয় সংকটে লিমা ও তার বাবা-মা। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া ৭ বছরের ছেলে ও আড়াই বছরের মেয়ের জননী লিমার বাবা-মা কোনভাবেই এর কোন কুল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। অন্যদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে অর্থ দিয়ে এর সমাধানের পথ খুঁজছেন ফয়সালের পরিবার। স্ত্রীর সাথে এমন ঘটনা মেনে সংসার করতেও আগ্রহী নয় লিমার স্বামী সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আতাহার-বুলনপুর গ্রামের মো. মিলন আলী।
লিমা খাতুন (৩৫) বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন ও বিয়ে করার কথা বলে সম্পর্ক করে এখন তা অস্বীকার করেছে। সে অনেকদিন আমার সাথে মেলামেশা করেছে। এমনকি আমি গর্ভবতী হয়েছিলান তার জন্যই। গর্ভপাত করিয়ে এখন মানতে চাইছে না।
লিমার মা বলেন, আমার জামাই রাজমিস্ত্রীর কাজে সিলেটে থাকায় এর সুযোগে সে বিভিন্ন সময়ে মরিয়মের শশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। আমার দেবর ও মরিয়মের চাচা হিসেবে মাঝেমধ্যে যেতে যেতে হঠাৎ একদিন গায়ে হাত দিয়ে জোড় করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরপর সেটার ভয় দেখিয়ে ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। এমনকি স্বামী ছেড়ে দিলেও নিজে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। জুন মাসের দিকে লিমা গর্ভবতী হলে জোড় করে গর্ভপাত করায় ফয়সাল। তিনি আরো জানান, ঘটনার বিষয়ে ফয়সালের বাসায় জানাতে গেলে উল্টো তার মা-বোন-ভাই হাসুয়া, লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে মারতে আসেন। অন্যদিকে, লিমার স্বামীও তাকে নিতে চাই না৷ অনেক বুঝিয়ে সেখানে বর্তমানে রাখলেও তার শশুর বাড়ির লোকজন তাকে মেনে নিতে পারছে না এবং অনেক অত্যাচার করছে।
লিমার ভাই ইব্রাহিম জানান, তাদের অনেক টাকা-পয়সা। তাই সালিসে টাকা দিয়ে এটিকে সমাধানের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার বোনের নামে যে কলঙ্ক লেগেছে তার কি হবে? সে তো তার স্বামীর সংসারেও কোন দিন শান্তিতে থাকতে পারবে না। তাই আমরা চাই, এর উপযুক্ত শাস্তি হোক। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, লিমার বাবা-মা গরিব বলে কোথাও এর নায্য বিচার পাচ্ছে না। থানা পুলিশ সব কিনে রেখেছে। এমনকি এলাকার মাতব্বরাও সুবিধা নিয়ে ফয়সালের পক্ষে কথা বলছে।
এদিকে ফয়সাল পরোক্ষভাবে ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করলেও, বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন। এরপর আর কোন কথা বলতে চান না ফয়সাল ।