নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে গত শনিবার উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নাজমা আক্তার (৪২) নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হলেও আরও দুইজন পলাতক রয়েছে। তারা হলেন- গ্রেফতার নাজমার মা চন্দ্রপুর বাজার এলাকার বেগম (৬২) ও উপজেলার জয়কৃষ্ণ নগর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৫২)। আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সকালে চন্দ্রপুর বাজার জামে মসজিদ থেকে একটিকোরআন শরীফ চেয়ে নেন হাবিবুর রহমান। পরে তিনি বাজার এলাকায় বসবাসকারী বেগম ও নাজমার ঘরে নিয়ে যান কোরআন শরীফটি। সেখানে থাকা পাগল বেশের এক লোক ওই কোরআন শরীফের ওপর নাচানাচি করে ও জুতা দিয়ে পেটায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে ঘটনাটি এলাকায় জানজানি হলে ধর্মপ্রাণ মানুষজন ও আলেম-ওলামারা গতকাল রবিবার বিকেলে ওই বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান তারা।
এ ঘটনায় ওই রাতেই তরিকুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি থানায় মামলা করেন। এতে হাবিবুর, নাজমা ও তার মা বেগমকে এজহার নামীয় আসামি করা হয়। আর একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে নাজমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পরিস্থিতি টের পেয়ে হাবিবুর, বেগম ও পাগলবেশী ওইব্যক্তি পালিয়ে যায়।
সিংধা ইউনিয়ন হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন বাক্কী জানায়, হাবিব নামের ওই ব্যক্তি স্থানীয় মসজিদ থেকে একটি কোরআন শরীফ চেয়ে নিয়ে যায়। পরে নাজমা ও বেগমের ঘরে থাকা পাগলবেশী এক ব্যক্তিকে দেয়। তিনি কোরআন শরীফ পায়ের নিছে ফেলে নাচানাচি করে এবং জুতা দিয়ে পেটায়। হাবিব, নাজমা ও বেগমের সামনেই ওই ব্যক্তি কোরআন অবমাননা করে। কিন্তু তারা কোনো প্রতিবাদ করেনি। এতে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও আলেম-ওলামারা মিলে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।
আরমান হোসেন বাক্কী বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে পাগল বলা হলেও কিন্তু ঘটনার পর তিনি পালিয়ে গেছেন। সত্যিকার পাগল হলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার কথা না।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান বলেন, ‘মামলার পরপরই রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি নাজমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।’