অলিউল হক ডলার,নাচোল : করোনা ভাইরাসের ছোবলে সমগ্র পৃথিবী থমকে গেছে। প্রত্যেকদিন আশংকাজনক হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা সেই সাথের মৃত্যুর। দিশেহারা হয়ে পড়েছে উন্নত পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। চীনের উহান প্রদেশে সর্বপ্রথম এই ভাইরাসের উৎপত্তি হলে পরবর্তীতে ইউরোপ আমেরিকাসহ সমগ্র পৃথিবীতে এই ভাইরাস আঘাতহানে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) করাল থাবা থেকে বাংলাদেশেও বাদ যায়নি। গত ৮মার্চ বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা আক্রান্তের কথা ঘোষণা করার পর থেকে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বেড়েই চলেছে। নারী, শিশু বৃদ্ধসহ সকল বয়সের মানুষ প্রতিনিয়ন আক্রান্ত হচ্ছে। আইআরডিসিআর প্রতিদিনই নতুন নতুন শনাক্ত ও মৃত্যুর তথ্য নিয়মিত বুলেটিনের মাধ্যমে তুলে ধরছেন।
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ২০এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের কথা জানাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন । চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় রবিবার (১০মে) পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫জন। এরমধ্যে ৫জনই নাচোল উপজেলার। এরা হলেন থানাপাড়া, আন্ধরাইল ও কাজলা চোপড়া পাড়ার অধিবাসী। আক্রান্তদের মধ্যে ২জন পুরুষ, ২জন নারী ও ১জন কিশোর। উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে আক্রান্তরা প্রত্যেকে এখন পর্যন্ত ভালো আছেন।
করোনার এই পরিস্থিতিতে নাচোল উপজেলা প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা রবিবার কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের বাড়ীতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আক্রান্তদের প্রত্যেককে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে ফলমুলসহ নগদ অর্থ সহায়তা বাবদ ৫হাজার টাকা প্রদান করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা ও ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান।
তুলনামূলকভাবে নাচোলে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ৬মে বুধবার নাচোলে সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই দিন ৩জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ২জন পুরুষ ১জন নারী। ২জনই ঢাকা ফেরত আর একজন যশোর বেনাপল ফেরত। নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুলতানা পাপিয়া জানান ,তুলনামুলক হারে নাচোলে নমুনা সংগ্রহ বেশি করা হচ্ছে। আর এ কারণে এখানে শনাক্তের সংখ্যাও বেশি। নাচোল উপজেলায় ৪এপ্রিল প্রথম নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শনিবার (১০মে) পর্যন্ত ২’শ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তিনি আরো জানান, নাচোল হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি এড়াতে হাসপাতালের গেটে নমুনা সংগ্রহের জন্য বুথ নির্মাণ করা হচ্ছে। ২/১ দিনের মধ্যে বুথ তৈরী সমাপ্ত হবে আশা করছি। এটি তৈরিতে সহযোগিতা করছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডাঃ সুলতানা পাপিয়া জানান, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে একাধিকবার ব্যবহারযোগ্য পিপিই পাওয়া গেছে ৬৫০টি। আর একবার ব্যবহারযোগ্য ১৪টি। বে-সরকারিভাবে ৪৩টি পাওয়া গেছে। এছাড়া তার উদ্যোগে প্রথম দিকে ১০টি ক্রয় এবং স্থানীয়ভাবে ৪০টি বানানো হয়েছিল।
একমাত্র সচেতনতাই পারে এই কঠিন অসুখ থেকে মানুষ বাঁচতে। তাই সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখি। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি।