নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মসজিদে নামাজের সামনের কাতারে বসা নিয়ে বিরোধের জেরে হারুন উর রশিদ নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি পিস্তল নিয়ে হামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত হয়েছেন হাফেজ মিজানুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাড়িয়াছনি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়িয়াছনির বাবুস সালাম মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী ও মুসুল্লিদের সরিয়ে সামনের কাতারে বসতে চেয়েছিলেন হারুন। বাধা দিলে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পিস্তল হাতে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন তিনি এবং হাফেজ মিজানুরকে আঘাত করেন। পরে ছাত্ররা তাকে আটক করে রূপগঞ্জ থানায় খবর দেয়। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কেবল পিস্তলটি থানায় নিয়ে যায়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফাইজ উল্লাহ বলেন, ‘হারুন অর রশিদ বহুদিন ধরেই প্রভাব খাটিয়ে মুসুল্লিদের সরিয়ে মসজিদের সামনের কাতারে বসতেন। এ ছাড়া ইসলামী মাসআলা নিয়ে ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নিয়ে কুটুক্তি করেন। এ নিয়ে হারুন অর রশিদ ফজরের নামাজের পর ছাত্রদের সঙ্গে বিতর্কের জেরে পিস্তল নিয়ে হামলা করে মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মিজানুর রহমানকে আহত করে। এ সময় ছাত্ররা পিস্তলসহ তাকে আটক করে রূপগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শুধুমাত্র পিস্তল থানায় নিয়ে যায়।’
স্থানীয় মুসুল্লি সিরাজ মিয়া বলেন, ‘হারুন অর রশিদ বাড়িয়া ছনি এলাকায় জমি কিনে ঘরবাড়ি করে বসবাস করছেন। তার সঙ্গে যে কেউ তর্ক করলে ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে গুলি করার ভয় দেখায়। একইভাবে আজ সকালে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বারি দিয়ে আহত করে। এরআগে প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করে জমি দখল করতে গেলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।’
অভিযুক্ত হারুন উর রশিদ বলেন, ‘আমি যে মসজিদে নামাজ পড়ি তারা হানাফী মাজহাবের অনুসারী, আর আমি হাম্বলী তরিকায় নামাজ পড়ি। তাই ইসলামী মাসআলা নিয়ে তর্ক হয়। এতোদিন সামনের কাতারেই বসতাম, আজ ভোরে নামাজ পড়তে গেলে তারা ব্লক করে সামনের কাতারে দাড়ায়। এতে আমি অপমানিত হই। পরে তর্কের জেরে দলবেঁধে আমাকে হামলা করতে চায়। তাই শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতে আমার লাইসেন্স করা পিস্তল নিয়ে যাই, কিন্তু কাউকে মারিনি। আমার দ্বারা আঘাত পায়নি। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ আমার পিস্তল নিয়ে যায়। লাইসেন্স দেখিয়ে তা ফেরতের কথা বলেছে। আমি তা নিয়ে আসব।’
রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর ওপর হামলা বিষয়ে মৌখিক জেনেছি। একটি বৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তবে অভিযোগ না পাওয়া কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বিষয়টি এলাকায় বসে মিমাংসা করা হয়েছে।’