ডেস্ক রিপোর্ট : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার রাস্তায় নিত্যদিনের যানজটে নাকাল পৌরবাসী। কালের পরিক্রমায় যানবাহন ও মানুষ বাড়লেও রাস্তাগুলো অপ্রশস্তই থেকে গেছে। ফলে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা। পৌরসভার মনাকষা মোড়ে এ দৃশ্য নিয়মিত। বুধবার বেলা ১১টার দিকে মনাকষা মোড়ে যানজট দেখে তা নিরসনে নিজেই রাস্তায় নেমে পড়েন পৌর মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, যা দেখে মেয়রের প্রতি আস্থা ও ভালবাসা বৃদ্ধির কথা জানান দর্শনার্থীরা ।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার মনাকষা মোড়টি ত্রিমুখী এবং শিবগঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই মোড়ে দিনের অধিকাংশ সময় যানজট লেগেই থাকে। আর পণ্যবাহী কোনো ট্রাক ঢুকলে পরস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। শুধু এই মোড়টিই নয়, শিবগঞ্জ বাজার-কানসাট সড়কের লাকি মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত রাস্তায় যানজট চরমে ওঠে। এতে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যানবাহনকে। ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।
যানজট নিয়ন্ত্রণে পৌরসভার পক্ষ থেকে মনাকষা মোড়ে ৩ জন ট্রাফিক দেয়া হয়। এতেও কাজ না হওয়ায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশকে মোড়টি যানজট মুক্ত করার জন্য আহ্বান জানান মেয়র। এতে পুলিশ সাড়াও দেয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, অপ্রশস্ত রাস্তা, মার্কেটগুলোর পার্কিং জোন না থাকা, ভবন রাস্তার পাশে হওয়া এবং কোনো ফুটপাত না থাকায় পৌরবাসীকে দুর্ভোগ মেনেই চলতে হয় এ রাস্তা দিয়েই। এছাড়া রাস্তারও ওপর যত্রতত্র রিকশা, রিকশাভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকার কারণেও যানজট লেগে যায়।
এদিকে ভোগান্তির বিষয়টি জেনে পৌর মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুধবার লাকি মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত পরিদর্শনের সময় যানজট নিয়ন্ত্রণে নিজেই নেমে পড়েন রাস্তায়। এ সময় তিনি দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনগুলো সরিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তার ওপর বসা দোকানপাট সরিয়ে দিয়ে না বসানোর জন্য তাদের সতর্ক করে দেন।
এ সময় শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেনসহ পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিবগঞ্জ থানা পুলিশ উপস্থিত থেকে সড়কগুলো যানজটমুক্ত করেন।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা শিবগঞ্জ কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তফা মামুন জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির দুই পাশের ভবনগুলো পার্কিং ছাড়াই নির্মিত হওয়ায় যানজট নিরসন সম্ভব হচ্ছে না। রাস্তাটি দ্রুত সম্প্রসারণ না করা হলে এ দুর্ভোগ কমবে না বলে মনে করেন তিনি।
শিবগঞ্জ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সভাপতি আলহাজ মো. আকবর হোসেন জানান, বর্তমানে পৌর এলাকার শহরের রাস্তাগুলো এত সংকীর্ণ যে মহিলা ও বৃদ্ধদের চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বড় বড় ভবনগুলো নির্মাণের আগেই রাস্তাগুলো সম্প্রসারণ হওয়া উচিত ছিল।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ পৌর মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম জানান, পৌরবাসীর ভোগান্তি দূর করতে মাঝে মধ্যে এভাবেই নিজে অভিযানে নামবেন। রাস্তার ওপর কোনো স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা হতে দেয়া এবং যানবাহন দাঁড়াতে দেয়া হবে না। যানজটযুক্ত রাস্তাটি সিঅ্যান্ডবি কর্তৃপক্ষের উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে রাস্তার পাশের ভবনগুলো ভেঙে রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণে সিঅ্যান্ডবি কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পৌরসভা এগিয়ে আসবে।