শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে দাদী এবং চাচীকে হত্যা, আসামি গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫২ অপরাহ্ন

বগুড়া পৌর এলাকার ইসলামপুর (হরিগাড়ি) পশ্চিম পাড়ায় নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে দাদীশাশুড়ি লাইলী বেওয়া (৮০) এবং তার নাতবউ হাবিবা ইয়াসমিনকে (২১)।

বুধবার রাত সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। একই সময়ে পারভেজের ছোট বোন বন্যাকেও (১৫) ছুরিকাঘাত করা হয়। নিহতদের স্বজনেরা প্রাথমিকভাবে বন্যার সাবেক প্রেমিক সৈকত ইসলামকে এই জোড়া খুনের জন্য দায়ী করছেন। পুলিশ সৈকতকে আটক করেছে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে।

পুলিশ জানায়, নিহত লাইলী বেওয়া মৃত আব্দুল কুদ্দুস বুলুর স্ত্রী এবং হাবিবা ইয়াসমিন তার নাতি পারভেজ ইসলামের স্ত্রী। ছুরিকাহত বন্যা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বন্যা। স্কুলে পড়ার সময় প্রতিবেশী সৈকত নামের এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সৈকত নেশাগ্রস্ত হওয়ায় পরিবারের চাপে বন্যা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপর থেকেই সৈকত বন্যাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এবং বিয়ের জন্য পরিবারের ওপর চাপ দিত।

ঘটনার সময় বন্যার বাবা বুলবুল এবং তার স্ত্রী পারভীন দুজনেই বাড়ির কাছে তাদের মুদি দোকানে ছিলেন। দুই ছেলে পারভেজ বাড়ির বাইরে এবং ছোট ছেলে কৌশিক প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল। বাড়িতে তখন লাইলী বেওয়া, হাবিবা ইয়াসমিন, বন্যা এবং হাবিবার চার মাস বয়সী শিশুসন্তান ছিল।

স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, ছুরিকাহত অবস্থায় বন্যা চিৎকার করতে করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে দেখেন, বারান্দায় বেসিনের কাছে হাবিবার গলাকাটা নিথর দেহ পড়ে আছে। ঘরের ভেতরে লাইলী বেওয়ারও গলাকাটা লাশ। আর হাবিবার চার মাস বয়সী শিশুসন্তানটি রক্তের মধ্যে গড়াগড়ি খাচ্ছে। প্রতিবেশীরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং বন্যাকে ভর্তি করান।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের জন্য ইতোমধ্যেই জোরদার অভিযান শুরু হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এলাকাবাসী মহিলারা চার মাস বয়সী শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে আহাজারি করতে দেখা যায়। তারা বলেন সৈকত নেশা করে এতটাই নৃশংস ছিল কোলে থাকা শিশুকে রেখে মা এবং দাদীকে জবাই করে।

বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত সৈকতকে নিয়ে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে গেলে শহরের ১৪ নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর হারিগাড়ি এলাকার হাজার হাজার লোক সৈকতের ফাঁসি দাবী করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটককৃত সৈকত ডিবি হেফাজতে রয়েছে।


এই বিভাগের আরও
Theme Created By ThemesDealer.Com