রবিবার মিছিলকারীদের হাতে লাঠি, গলায় স্লোগান-‘স্বাস্থ্যসেবায় সংস্কার চাই, হামলার বিচার চাই।
পরিস্থিতি সামলাতে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর ছুটে আসেন। চিকিৎসক-কর্মচারীদের অনুরোধ করেন ধর্মঘট স্থগিত রাখার।
বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল থেকে সরে গিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি ঘোষণা দেন-সোমবার আমতলা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি।
আন্দোলনের শুরু তিন দফা দাবি দিয়ে- অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দক্ষ জনবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, দুর্নীতি দমন। পরে যুক্ত হয় নতুন দাবি-অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার। শুক্রবার থেকে টানা অবরোধ, অনশন, লাঠিচার্জ, পাল্টা হামলা-সব মিলিয়ে বরিশাল এখন আন্দোলনের আঁতুরঘর।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর বললেন, ‘পরিস্থিতি ভীতিকর। ৯০০ চিকিৎসক-নার্স আতঙ্কে। রোগী সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।’
বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার ইমদাদুল হোসেন বলেন, ‘সব নিয়ন্ত্রণে।’ কিন্তু শহর জানে, নিয়ন্ত্রণ মানেই শান্তি নয়। বরিশালের আকাশে প্রশ্ন ভাসছে- স্বাস্থ্য খাত সংস্কার না হলে এই আগুন কোথায় গিয়ে থামবে?
চিকিৎসক-কর্মচারীদের অবস্থান
নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি, বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঠি দেখে আতঙ্ক, ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ এবং হাসপাতাল পরিচালকের কাছে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দাবি। আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করে আগামীকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত দাবি পূরণের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মা তিন দিন ধরে ভর্তি। আজ ডাক্তার পাচ্ছি না, নার্সরা ভয়ে সরে গেছে। আমরা কাকে বলব? আন্দোলনকারীরা যা-ই চান, কিন্তু রোগীরা কেন ভুক্তভোগী হবে?
পথচারী কলেজছাত্রী সাবিহা আক্তার বলেন, ‘আমরা সংস্কারের দাবি সমর্থন করি। তবে হাসপাতালে এভাবে সংঘর্ষ হলে সাধারণ মানুষই বিপদে পড়ে।’
নগরীর চকবাজার এলাকার রিকশাচালক নাসির মোল্লা বলেন, ‘শহরে প্রতিদিন সমাবেশ মিছিল হয়। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে কেউ রাস্তা অবরোধ করে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের বিপদে ফেলেন না। আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল রোডে যাত্রী কমে গেছে। খাওয়া-দাওয়া চালানো মুশকিল হয়ে গেছে।’
