ঢাকারবিবার , ১৭ আগস্ট ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. চাকরি
  6. জাতীয়
  7. ধর্ম
  8. প্রবাস
  9. প্রযুক্তি
  10. বাণিজ্য
  11. বিনোদন
  12. মতামত
  13. রাজধানী
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে উত্তাল বরিশাল


আগস্ট ১৭, ২০২৫ ৭:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বরিশালের রাস্তায় উত্তাল। স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে ২০ দিন ধরে চলা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নতুন মোড়। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিলকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা। স্লোগান থেকে ইটপাটকেল-সব মিলিয়ে হাসপাতাল এলাকার পরিস্থতি উত্তাল ছিল।

কাল সোমবার হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীরা কর্মসূচি দেবে। আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার কর্মসূচি ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। উভয়পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠবে শহরের পরিবেশ। 

রবিবার মিছিলকারীদের হাতে লাঠি, গলায় স্লোগান-‘স্বাস্থ্যসেবায় সংস্কার চাই, হামলার বিচার চাই।

’ তারা হাসপাতালে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ হাসপাতালের ফটকে ব্যারিকেড দেয়। বিক্ষোভকারীরা তখন আলটিমেটাম দেন-এক ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের বিচারের আশ্বাস দিতে হবে। এর মধ্যেই হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনা চরমে ওঠে।
হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় চিকিৎসক-কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ঘোষণা আসে-তারা কর্মবিরতিতে যাবেন। আতঙ্কে সাধারণ রোগীরা দিশেহারা। 

পরিস্থিতি সামলাতে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর ছুটে আসেন। চিকিৎসক-কর্মচারীদের অনুরোধ করেন ধর্মঘট স্থগিত রাখার।

চিকিৎসকেরা আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিতের সময়সীমা বেঁধে দেন। কিন্তু এর মধ্যেই উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপ। শেষমেশ পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ আসে। 

বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল থেকে সরে গিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি ঘোষণা দেন-সোমবার আমতলা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি।

আন্দোলনের শুরু তিন দফা দাবি দিয়ে- অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দক্ষ জনবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, দুর্নীতি দমন। পরে যুক্ত হয় নতুন দাবি-অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার। শুক্রবার থেকে টানা অবরোধ, অনশন, লাঠিচার্জ, পাল্টা হামলা-সব মিলিয়ে বরিশাল এখন আন্দোলনের আঁতুরঘর।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর বললেন, ‘পরিস্থিতি ভীতিকর। ৯০০ চিকিৎসক-নার্স আতঙ্কে। রোগী সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।’

বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার ইমদাদুল হোসেন বলেন, ‘সব নিয়ন্ত্রণে।’ কিন্তু শহর জানে, নিয়ন্ত্রণ মানেই শান্তি নয়। বরিশালের আকাশে প্রশ্ন ভাসছে- স্বাস্থ্য খাত সংস্কার না হলে এই আগুন কোথায় গিয়ে থামবে?

চিকিৎসক-কর্মচারীদের অবস্থান
নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি, বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঠি দেখে আতঙ্ক, ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ এবং হাসপাতাল পরিচালকের কাছে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দাবি। আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করে আগামীকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত দাবি পূরণের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মা তিন দিন ধরে ভর্তি। আজ ডাক্তার পাচ্ছি না, নার্সরা ভয়ে সরে গেছে। আমরা কাকে বলব? আন্দোলনকারীরা যা-ই চান, কিন্তু রোগীরা কেন ভুক্তভোগী হবে?

পথচারী কলেজছাত্রী সাবিহা আক্তার বলেন, ‘আমরা সংস্কারের দাবি সমর্থন করি। তবে হাসপাতালে এভাবে সংঘর্ষ হলে সাধারণ মানুষই বিপদে পড়ে।’

নগরীর চকবাজার এলাকার রিকশাচালক নাসির মোল্লা বলেন, ‘শহরে প্রতিদিন সমাবেশ মিছিল হয়। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে কেউ রাস্তা অবরোধ করে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের বিপদে ফেলেন না। আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল রোডে যাত্রী কমে গেছে। খাওয়া-দাওয়া চালানো মুশকিল হয়ে গেছে।’